
অসিত কর্মকার সুজন
পূজা মানেই আনন্দ আর পূজা মানেই খাওয়া-দাওয়া।হেঁশেলে চলে ভেজ-ননভেজের পাঁচমিশালী।পোষাক-পরিচ্ছেদের মতো রান্না-বান্নাতেও নতুনত্ব আনতে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন।অতিথিদের পাতে নতুন কিছু দিতে কে-না চায়।আর এসব চিন্তা থেকেই এবারের হেঁশেলে আপনাদের জন্য রকমারী কিছু রান্নার রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী অসিত কর্মকার সুজন।আপনিও চাইলে আপনার হেঁশেলে তৈরী করতে পারেন এসব খাবার।
টক মিষ্টি বাসন্তী বেগুন

টক মিষ্টি বাসন্তী বেগুন
উপকরণ ও পরিমাণ :
বেগুন: ২ টি , টক দই: ৩ চামচ , কিসমিস পেস্ট আধা কাপ , জলপাই পেস্ট আধাকাপ , সরষেবাটা: ৩ চামচ , কাঁচালঙ্কা: ২ টি , কালোজিরে: ২ চামচ , ,তেঁতুলগোলা জল : ১/২ চামচ , সরষে তেল এক কাপ ,লবণ স্বাদমতো , চিনি আধা চা চামচ , নুন স্বাদমতো ,হলুদগুঁড়ো পরিমাণ মতো ।
প্রণালী:
বেগুনগুলো লম্বালম্বি ভাবে ২ টুকরো করে কেটে নিন । এবার এক টুকরো বেগুনের মাঝে আধা ইঞ্চি করে পর পর একটু গর্ত করে চিরে নিন । এবার চেরা বেগুনের এক পাশে কিসমিস পেস্ট এবং অন্য পাশে জলপাই পেস্ট দিতে হবে । এভাবে করে পর পর পেস্ট ভরে চেপে চেপে দিন । এবার টুকরোগুলো খুব সাবধানে ভাল করে ভেজে আলাদা করে সরিয়ে রাখুন।টক দইয়ের সঙ্গে পরিমাণ মতো নুন ও ১ চা-চামচ হলুদ মিশিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে নিন। কড়াইয়ে যে অতিরিক্ত তেল থাকবে তাতে কালোজিরে ফোড়ন দিন।এর পর সরষেবাটা ও কাঁচালঙ্কা কড়াইয়ে দিয়ে ভাল ভাবে মিশিয়ে নিন।এ বার দইয়ের মিশ্রণটি কড়াইয়ে ঢেলে অল্প ক্ষণ নাড়তে থাকুন।বাসন্তী রঙের এই মিশ্রণটি নামানোর আগে তেঁতুলজল এবং পরিমাণ মতো নুন ও চিনি মিশিয়ে দিন। এবার ভেজে রাখা বেগুনগুলি সুন্দর ভাবে সাজিয়ে মিশ্রণটি উপর দিয়ে ছড়িয়ে দিন এবং গরম গরম পরিবেশন করুন।
মাটন ঘটি কোর্মা
উপকরণ ও পরিমাণ :
পুরের জন্য

মাটন ঘটি কোর্মা
স্বেদ্ধ করা খাসির মাংস কিমা দুই কাপ , আদা ও রসুন কুচি আধা চা চামচ , পেয়াজ কুচি দুই টেবিল চামচ , ধনেপাতা কুচি আধা কাপ , কাঁচামরিচ কুচি এক টেবিল চামচ , পুদিনা কুচি এক চা চামচ , লেবুর রস এক টেবিল চামচ , শুকনো খোলায় ভাজা জিরা গুরো এক চা চামচ ।
কোর্মার জন্য
পেঁয়াজ বাটা এক চা চামচ , আদা বাটা এক চা চামচ , রসুন বাটা এক চা চামচ , পাঁচ ফোড়ন গুঁড়া আধা চা চামচ, গোলমরিচ গুড়া এক চা চামচ, আলু বোখারা ৫/৬টি, মাওয়া এক টেবিল চামচ, তেল এক কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, গরম মসলা, তেজপাতা, লবণ পরিমাণ মত, দুধ দুই কাপ ,, চিনি ১ চা চামচ ।
লুচির জন্য
ময়দা ১ কাপ, তেল দুই টেবিল চামচ , পানি ১ কাপ লবণ সামান্য ।
প্রণালী :
পুরের সব উপকরণ এক সাথে মেখে নিতে হবে ।ময়দার মধ্যে তেল, লবণ ও জল মিশিয়ে ময়ান দিয়ে মেখে দিতে হবে। এরপর মাখানো ময়দা ৩০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এবার ছোট ছোট লুচি বানিয়ে হাতে নিয়ে তার মধ্যে আগে থেকে করে রাখা মাটনের পুর দিয়ে লেচির চারপাশ থেকে মুরে এনে ঘটির মুখের মতো করে নিতে হবে । এবার ডুবো তেলে ভেজে তুলে রাখুন ।
এবার অন্য একটি প্যানে তেল দি্তে হবে । তেল গরম হলে সব মশলা দিয়ে কষিয়ে দুধ ও গোলমরিচ গুঁড়া দিয়ে ঢেকে দিন। ঝোল কমে গেলে, আলু বোখারা, মাওয়া, ঘি, গরম মসলা, চিনি ও আগে থেকে ভেজে রাখা পুর ভরা ঘটি গুলো দিয়ে খুব সাবধানে নেড়ে অল্প আঁচে ৫ মিনিট রেখে নামিয়ে নিন।
সবুজ ইলিশ

সবুজ ইলিশ
উপকরণ ও পরিমাণ :
ইলিশ মাছ টুকরা৬ টি,
পেঁয়াজ পেস্ট ১ কাপ,
টক দই ১ কাপ,
আদা বাটা ১ চামচ,
কাঁচা মরিচ ৩-৪ টি,
জিরা গুরা আধা চামচ
পুঁই শাক ও কাঁচামরিচ পেস্ট দুই কাপ
সয়াবিন তেল হাফ কাপ, লবণ পরিমাণ মত।
প্রণালী :
কড়াইয়ে তেল দিতে হবে , এবার পেঁয়াজ পেস্ট দিয়ে অল্প ভেজে নিতে হবে। এরপর আদা বাটা দিয়ে নাড়তে হবে । এরপর জিরা গুরা দিয়ে নেড়ে পানি দিতে হবে । তেল পানির অপর উঠে আসলে দই মাখানো ইলিশ মাছ আস্তে আস্তে করে ছেড়ে দিয়ে পরিমান মত লবণ দিতে হবে দিতে হবে । সাবধানে নাড়তে হবে । একটু মাখোমাখো হয়ে আসলে পুঁই শাক ও কাচামরিচ পেস্ট দিয়ে আরো পাঁচ মিনিট রেখে নামিয়ে নিয়ে পরিবেশন করতে হবে ।

ডাব চিকেন
ডাব চিকেন
উপকরণ ও পরিমাণ : চিকেন ৫/৬ টুকরো , মাখন ৫ গ্রাম, নারকেলের দুধ ২৫ মিলিগ্রাম, আদা বাটা ৫ গ্রাম, কচি নারকেল ব্লেন্ড ৫০০ গ্রাম, কাঁচামরিচ ৬ গ্রাম, সরিষা বাটা ৫ গ্রাম, লবণ পরিমাণমতো, চিনি পরিমাণমতো, কচি নারকেলের টুকরা ১টা পুরো।
প্রণালী :
মাংসের টুকরো গুলো ভালো করে পরিষ্কার করে রাখুন।কচি নারকেলের ক্রিম তৈরিতে প্রথমে নারকেলটি থেকে শাস আলাদা করতে হবে, যেন এতে কোনো বাদামি অংশ লেগে না থাকে।এবার নারকেলের পানি দিয়ে এটাকে ভালোভাবে ব্লেন্ড করতে হবে। ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে ছোবা ফেলে দিতে হবে। ৫০০ গ্রাম তৈরিতে ৫-৮ পিস নারকেল লাগবে। অবশ্য এটা নারকেলের সাইজের ওপর নির্ভর করে।একটা কড়াইয়ে মাখন গরম করতে হবে এবং কাঁচামরিচ, আদা বাটা, সরিষা বাটা ও লবণ দিয়ে চিংড়িগুলো কড়াইয়ে দিতে হবে। এর পর নাড়তে হবে। পরে কচি নারকেলের পেস্ট ও নারকেলের দুধ দিয়ে আস্তে আস্তে নাড়া দিতে হবে। এর পর বাকি সব উপকরণ ঢেলে দিতে হবে। রঙ পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তার পর আপনার ইচ্ছামতো বাটিতে উঠিয়ে উপরের ঝোলটুকু ঢেলে দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, এটা যেন গাঢ় হয়।

চিড়া ও মুড়ির মোয়া
চিড়া ও মুড়ির মোয়া
উপকরণঃ
মুড়ি ১ পোয়া, আখের গুড় ১০০ গ্রাম, পানি আধা কাপ।
প্রণালীঃ
চুলায় পানি ও গুড় দিয়ে ভালোভাবে জ্বাল দিতে হবে। যখন গুড় একটু চিট চিট করবে তখন মুড়ি দিয়ে ভালো করে নেড়ে গরম গরম মোয়া বানাতে হবে। ঠান্ডা হলে টিনে ভরে রাখতে পারবেন। একইভাবে চিড়ার মোয়া বানানো যায় ।