0

ডা. ওয়ানাইজা রহমান
মস্তিষ্ক সজাগ রাখতে অল্প করে খাবেন
এক সাথে বেশি পরিমাণে খাবার গ্রহণ করলে সারা দিন শরীরটা অলস লাগবে, ঘুম-ঘুম ভাব এসে শরীরটাকে নিষ্ক্রিয় করে দিতে চাইবে। কারণ বেশি পরিমাণ খাবার খেলে পরিপাকতন্ত্রে রক্ত প্রবাহের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফরে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কিছুটা কমে যায়। মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে তন্দ্রা ও আলস্য এসে শরীরে ভর করে। শরীরের এই আলস্যভাব ও তন্দ্রা দূর করতে হলে দিনের তিনবারের খাবারকে অন্তত চার থেকে ছয় ভাগ করে খেতে হবে, অর্থাৎ তিনবারের খাবারকে ভাগ করে ছয় বেলা খেতে হবে। খাবারের পরিমাণ না বাড়িয়ে এবং ক্যালরি ঠিক রেখে চার থেকে ছয়বার খেতে হবে। এতে করে সারা দিন আপনি থাকবেন সতেজ, সজাগ ও সতর্ক। এভাবে প্রতিটি দিন চলতে পারলে আপনার বয়স বাড়বে ঠিকই, কিন্তু আপনার মস্তিষ্ক থাকবে অপেক্ষাকৃত কমবয়সী তরতাজা। বৃদ্ধ বয়সেও চিন্তাশক্তি থাকবে প্রখর, মেধা থাকবে ধারালো। স্মৃতিশক্তি থাকবে ঝরঝরে। মস্তিষ্কে সজীব রাখার এই প্রক্রিয়ায় গোটা শরীরই উপকৃত হবে। ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যাবে, ত্বকে থাকবে প্রোজ্জ্বল লাবণ্য, শরীরে থাকবে না বাহুল্য মেদের উপস্থিতি। কাজেই সবার আগে শরীরের হেডকোয়ার্টার মস্তিষ্ক আর কম্পিউটারের সিপিইউকে গতিময় রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে। তবেই আপনার কম্পিউটার যেমন ওপেন হতে দেরি করবে না, তেমনি আপনার মস্তিষ্কও কুয়াশায় আবৃত্ত হবে না। মস্তিষ্কের সাথে স্মৃতির যোগ ঘটাতে পারলেই আপনার মেধা ও চিন্তার বিকাশ ঘটবে সঠিকভাবে। মস্তিষ্কের গুণেই আপনি প্রস্ফুটিত হতে পারবেন আপন মহিমায়।
ভ্রমণের সময় সুস্থ থাকার উপায়
ভ্রমণের সময় সুস্থ থাকা একান্ত প্রয়োজন। আমরা সরকারি কাজে-কর্মে কিংবা বেড়াতে যেতে ভ্রমণ করি। শরীর সুস্থ না থাকলে কিছুই ভালো লাগে না। যেকোনো আনন্দ ভ্রমণ শুধু সামান্য অসুস্থতার জন্য পণ্ড হয়ে যেতে পারে। অথচ সামান্য কিছু ব্যবস্থা নিলে সুস্থ থাকা সম্ভব।
#ভ্রমণের সময় সাথে কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন। যেমন-প্যারাসিটামল, অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টাসিড ইত্যাদি।
# নিয়মিত কোনো ওষুধ ব্যবহার করলে তা সাথে রাখুন।
# অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ও লিউকোপ্লাস্ট সাথে নিন।
#ভ্রমণের সময় হাম হলে বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে চিকিৎসকের নির্দেশিত ওষুধ খেয়ে নিন এবং সাথে রাখুন।
# ফুটানো পানি ও শুকনো খাবার সাথে নিন যাতে রাস্তার পাশে থেকে কোনো খোলা খাবার খেয়ে কোনো সমস্যা না হয়।
# ওর স্যালাইন কয়েক প্যাকেট সাথে নিন।
# আপনার যদি ডাস্ট বা ধুলাবালিতে অ্যালার্জি থাকে তবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যানবাহনে ভ্রমণ করাই ভালো। আর তা সম্ভব না হলে ধুলা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।
# যাদের মাইগ্রেন জাতীয় মাথাব্যথা আছে তারা তাদের ওষুধ সাথে রাখবেন এবং রোদে চশমা ব্যবহার করবেন।
# শিশুদের সাথে নিয়ে ভ্রমণের সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বনের প্রয়োজন। শিশুর প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং তাকে নিয়মিত যে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তার মোবাইল নম্বর সাথে রাখুন ও প্রয়োজনে যোগাযোগ করবেন।
# শিশুর খাবার সম্ভব হলে সাথে নিয়ে যাবেন। বাইরের খাবার দেয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। নতুন কোনো খাবার দেবেন না বা যাতে অ্যালার্জি হয় এমন খাবারও নেবেন না।
# একটু সতর্কতার সাথে ভ্রমণ করলেই তা আপনাদের জন্য হবে আনন্দদায়ক। প্রয়োজনে নিকটবর্তী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।
লেখিকা : সহযোগী অধ্যাপিকা, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ।
চেম্বার : দি বেস্ট কেয়ার হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ২০৯/২, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা।