
আন্জুমান রোজী, কানাডা থেকে
(টরন্টো থেকে): বৈশাখী সুর বাংলাদেশ ছাড়িয়ে এখন সমগ্র বিশ্বজুড়ে প্রবাসী বাঙালিদের হৃদয়ে এসে বাজছে। এ সুর আনন্দের, এ সুর মিলনের, এ সুর বাঙালি সংস্কৃতির চেতনার। পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রবাসী বাঙালি সেই সুর বহন করে চলেছে বছরের পর বছর। এবারেও কানাডা টরন্টো সেজেছিল বৈশাখী আনন্দে। সপ্তাহব্যাপী উৎসবমুখর এই শহর যেন প্রাণের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল। এমনকি বর্ষবরণ উৎসবে যোগ দিতে টরন্টোর বাইরে থেকেও মন্ট্রিয়ল ও অটোয়া শহরের বাঙালিরা মিলিত হয়েছিলেন।
সকল সাংস্কৃতিক সংগঠনের সম্মিলিত প্রয়াসে আয়োজন করা হয়েছিলো মঙ্গল শোভাযাত্রার। “প্রতিবাদ প্রতিরোধের মঙ্গলময় বৈশাখ। মুছে যাক সকল জরা-জীর্ণতা আর গ্লানি”- এমন শ্লোগানকে সামনে রেখে গত ১৪ এপ্রিল শুরু হয় বাংলা নববর্ষ বরণ। ইয়াং বাংলাদেশি টরন্টোনিয়ান সংগঠন আয়োজিত বৈশাখী উৎসব ১৪২৪ এর প্রথম দিনটি ছিলো শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আল্পনা আঁকা, ম্যুরাল উন্মোচন ও পুরষ্কার বিতরণ। শহরের নামকরা শিল্পী এবং সংগঠনের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি ছিলো আড়ম্বরপূর্ন। বৈশাখের গান, ধামাই, পাহাড়ি নাচ, বায়োস্কোপ, রাজশাহীর গম্ভীরা, বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতে ভরপুর বাঙালির মিলন মেলায় অনেক বিদেশিও মেতে ওঠেন বাংলা নববর্ষ উদযাপনে। দ্বিতীয় দিনে রং-বেরংয়ের ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। ১৫ এপ্রিল, শনিবার দুপুরে টরন্টোর বাংলা পাড়া বলে খ্যাত, ড্যানফোর্থ এবং ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকার শপার্স ওয়ার্ল্ড এর পার্কিং লট থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে ডজ রোড ঘুরে ঘরোয়া রেস্টুরেন্ট প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। নাচ, গান আর কবিতার মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে বাংলার ঐত্যিহকে বিশ্বের দরবারে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। তাছাড়া পুঁথি পাঠ, বায়োস্কোপ, ব্যান্ডের সুরেও বাংলার নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। বৈশাখী উৎসব ১৪২৪ এর উদ্ভোধন করেন বিচেস ইস্ট-ইয়র্ক এলাকার এম.পি নাথানিয়েল এরকিন-স্মিথ, এম.পি.পি আর্থার পট ও কাউন্সিলর জ্যানেট ডেভিস।
বৈশাখ এলোএলো করতেই বর্ণিল সাজে সাজতে শুরু করে টরেন্টোর বাঙ্গালী পাড়াগুলো। সেইসাথে ঘরেঘরে চলতে থাকে বৈশাখী আয়োজন।প্রবাসে থেকেও বাঙ্গালি ভুলে যায়নি বাংলার শিল্প, সংস্কৃতি। প্রাণের টানে সব বাঙালি একত্রিত হয়ে একটি ছোট্ট বাংলাদেশের রূপ তুলে ধরে, হয় বন্ধুত্বের মিলন বন্ধন। জরা যন্ত্রণা থেকে বের হয়ে নতুন বছরে নতুন উজ্জীবনায় বাঙালি সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পকে ধূলিসাৎ করে দিতে বদ্ধপরিকর।একদিন বাংলাদেশ অন্ধকারমুক্ত হবেই। সকল বাঙালির এই হোক নববর্ষের দৃপ্ত অঙ্গীকার।
https://www.facebook.com/ailabew/videos/10211264729886093/