আহসান শামীমঃ কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে আরেকটা রূপকথা জন্ম নিল । সে রূপকথা টাইগারদের অসাধারণ এক লড়াইয়ের। সাকিব, মাহামুদুল্লাহর ২৩৪ রানের রেকর্ড জুটি আর দুই জনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি আর স্মরনীয় জয় দিয়ে সেমিফাইনালের আশা জাগিয়ে রাখলো বাংলাদেশ।
আজ শনিবার ইংল্যান্ড অষ্ট্রেলিয়া ম্যাচের ফলাফলের ওপর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সেমিফাইনালে ওঠা না ওঠার ব্যাপারটা জড়িয়ে গেছে। জড়িয়ে গেছে ইংল্যান্ডের বৃষ্টিও। বাংলাদেশের সামনে এখন ইংলিশদের জয় বা বৃষ্টির কারনে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার দুটি পথ খোলা। এই দুই পথের যে কোন একটি বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে পারে সেমিফাইনালে।
টস জিতে ব্যাট করতে আসা নিউজিল্যান্ডকে ২৬৫ রানের বেঁধে ফেলেন বোলাররা। টার্গেটা বড় হতে দিলেন না মোসাদ্দেক । বল হাতে ৩ ওভারে ১৩ রানে তিন উইকেট তুলে নেন তিনি। এছাড়া চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে বল হাতে তাসকিন নেন দুই উইকেট । উইকেট পান রুবেল আর কাটার মাস্টার মোস্তাফিজও।
২৬৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে তামিম ইকবাল ০, সৌম্য সরকার ৩, সাব্বির রহমান রুম্মান ৮, মুশফিকুর রহিম ১৪। নিউজিল্যান্ডের ২৬৫ রানের জবাবে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যান মিলে যোগ করেছেন মাত্র ২৫ রান। চার উইকেট হারিয়ে টাইগারদের জয়ের আশার আকাশে তখন সংকটের মেঘ জমছে। ঠিক এই সংকটের মেঘ জমা হওয়ার মুহূর্তে দলের হাল ধরলেন সাকিব আর মাহমুদউল্লাহ। ঘুরে দাঁড়ালো বাংলাদেশ।জ্বলে উঠলেন সাকিব, জ্বলে উঠলেন মাহমুদউল্লাহও।
টাইগার ব্যাটসম্যানদের এই ঘুরে দাঁড়ানোটা কোনক্রমেই আঁচ করতে পরেনি নিউজিল্যান্ড। তাদের বোলিং সূচনাটাও হয়েছিল আক্রমণাত্নক। প্রথম ওভারেই তামিম এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরতেই অনেকের বুকের ভেতরে জ্বলতে থাকা আশার আলোটা হয়তো দপ করে নিভে গিয়েছিল। বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরাও তখন ভাবতে পারেন নি তাদের সামনে কতবড় বিষ্ময় অপেক্ষা করে আছে।
টপ অর্ডারে এমন ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ের সর্বশেষ নজীর বাংলাদেশ দেখিয়েছিল ২০১১ সালের ডিসেম্বরে, পাকিস্তানের বিপক্ষে। মিরপুরে সেদিন প্রথম চার ব্যাটসম্যান মিলে করেন মাত্র ২৩ রান। আর পাকিস্তান জিতেছিল ৫ উইকেটে ।
গতকালের ম্যাচে ১৭৬ ম্যাচে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে এক বিরল রেকর্ডের অধিকারী হয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সহ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রশংসীয় অধিনায়কত্ব করে মাশরাফি আর ১১৫ বলে ১১৪ রান আর একটি রান আউট করে ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে সাকিব স্মরনীয় করে রাখলেন দিনটা ।
২০০৫ সালে এই মাঠেই একমাত্র জয় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে । আইসিসির ইভেন্টে সবচেয়ে বেশি সেন্চুরীর রেকর্ডটাও নিজের করে রাখলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ।
ছবিঃ ইএসপিএন