গেলো ১৭ বছর ধরে প্রামাণ্যচিত্রের সঙ্গেই প্রায় বসবাস শবনম ফেরদৌসীর। এ পর্য্ন্ত ২০টি প্রামান্যচিত্র বানিয়েছেন। পাশাপাশি কাজ করেছেন টেলিভিশন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য।এতগুলো ছবি বানানোর পরও প্রায়ই তাকে অনেকের কাছ থেকে শুনতে হতো ‘এবার একটা সিনেমা বানান।’ শবনম হাসতেন। বলেন, প্রামাণ্যচিত্রও যে সিনেমা এটা আমাদের দেশের মানুষ এখনও বুঝে ওঠেনি। তবে ৪০ বছর বয়সের পর একটা ফিকশন ফিল্ম তৈরীতে হাত দেবেন এমন একটা ভাবনা সব সময়ই শবনমের মাথায় ছিলো। আর সে চিন্তা থেকেই সরকারী অনুদানের জন্য আবেদন করেন এবং পেয়েও যান।
এত বছর ধরে কাজ করছেন কিন্তু আগে কখনও অনুদানের বিষয়টি কেন ভাবেননি জানতে চাইলে বলেন,আসলে সরকারী অনুদান বিষয়টি দান নয় এটা একটা সম্মান। এই বিষয়টা আমদের এখানে এতদিন ধোঁয়াশা ছিলো। তেমন চর্চাও ছিলো না।তবে অনুদান কমিটি এখন পুনঃবিন্যাস হয়েছে। শক্তিশালী হয়েছে।নতুন নির্মাতারা অনুদান পাচ্ছেন। ভালো ভালো কাজ হচ্ছে। ভালো স্ক্রিপ্ট জমা পড়ছে।বেশ একটা প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরী হয়েছে।আগে এমন ছিলো না তাই তখন অনুদানের জন্য তেমন আগ্রহ কাজ করেনি।
তবে অনুদান পেয়ে যাওয়ার পর শবনম বেশ বিষ্মিত। বলেন,আমার গল্পটা কোন ইস্যুভিত্তিক কাহিনী নয়। না আছে নারীইস্যু না আছে মুক্তিযুদ্ধ। এমন একটা গল্প অনুদান পেয়ে যাবে আমি ভাবতেও পারিনি।
ইতিমধ্যে শবনম ছবিটি তৈরীর প্রিপারেশন শুরু করে দিয়েছেন।অক্টোবর থেকে শুরু করে ডিসেম্বরের মধ্যেই শ্যুটিং শেষ করতে চান।ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে শ্যুটিং করবেন।

প্রযোজক সামিয়া জামান
ছবির চরিত্রগুলো নিয়ে বললেন, প্রধান চরিত্রটিই হবে একজন রক সুপারষ্টারের। এজন্য বিখ্যাত কোন অভিনেতার কথাই ভাবছি।যার সঙ্গে চরিত্রটি মানিয়ে যাবে।বাকী সবাই সাধারন কাস্টিং।এমনও অনেকে থাকবেন যারা রিয়েল লাইফ ক্যারেকটারে অভিনয় করবেন।আর নায়িকা বলতে সাধারণত যা বোঝায় তেমন কোন গ্ল্যামারাস চরিত্র এতে থাকবে না।এ ছবিতে বাংলাদেশের নিজস্ব যে শিল্পরীতি তার প্রতিফলন ঘটবে।এবং একজন শিল্পীর ভেতরের দ্বন্দ্ব এবং অন্বেষন ও থাকবে।
এতগুলো প্রামাণ্যচিত্র বানানো পর কাহিনীচিত্রে যাওয়া। এতে কোন জটিলতার সৃস্টি হবে কিন জানতে চাইলে বলেন,একটু তো ভয় হচ্ছেই কিন্তু নতুনের স্বাদও তো গ্রহন করতে চাই।তবে প্রমাণ্যচিত্র নির্মাতা হিসেবে এতে এর কিছু ছাপ অজান্তেই হয়তো এসে যাবে। তবুও সব ছাপিয়ে আমি ছবির ভাষায় ঠিকঠাক মতো গল্পটা বলতে চাই।আমাদের দেশের এখনও ছবিতে ঠিকঠাক গল্প বলার অভাব আছে।আমি চেষ্টা করবো সাবজেক্ট ছাপিয়ে যেন অবজেক্ট প্রধান হয়ে না যায়।এটা হবে অনেকটা আমার নিজের সঙ্গে নিজের চ্যালেন্জ।
এই ছবির প্রযোজকও একজন নির্মাতা। কিভাবে একজন নির্মাতা প্রযোজক হয়ে গেলেন সে প্রসঙ্গে শবনম বলেন,সামিয়া জামান আর আমি দীর্ঘদিনের সহকর্মী। এবং অদ্ভুত ভাবে সামিয়া আপার সঙ্গে আমার বোঝাপড়াটা সাংঘাতি ভালো।আমরা একে অন্যকে খুব ভালো বুঝতে পারি।আপার ভালোবাসাটা আমি যেমন এনজয় করি তেমনি তার শাসনটাও উপভোগ করি। তাই আমি বলাতে উনি রাজী হয়ে যান ….। তবে পরিচালক আর প্রযোজকের বোঝাপড়াটা খুব জরুরী।
জানতে চাইলাম এখন থেকে কি ফিকশন ফিল্মে নিয়মিত হবেন?বলেন,যদি ঠিকঠাক ভাবে ছবিটা বানাতে পারি এবং এতে আনন্দ পাই, তাহলে প্রামাণ্য চিত্রের পাশাপাশি কাহিনী চিত্রেও নিয়মিত হবো আশা রাখছি।
স্বাগতা জাহ্নবী