0
ফেইসবুক এর গরম আড্ডা চালাতে পারেন প্রাণের বাংলার পাতায়। আমারা তো চাই আপনারা সকাল সন্ধ্যা তুমুল তর্কে ভরিয়ে তুলুন আমাদের ফেইসবুক বিভাগ । আমারা এই বিভাগে ফেইসবুক এ প্রকাশিত বিভিন্ন আলোচিত পোস্ট শেয়ার করবো । আপানারাও সরাসরি লিখতে পারেন এই বিভাগে । প্রকাশ করতে পারেন আপনাদের তীব্র প্রতিক্রিয়া।

মেহেরুন্নেছা
সেন্টমার্টিনের সেই বিকেলে এক দ্বীপকন্যার দেখা পেয়েছিলাম।
“তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে”— মিষ্টি একটি কচিকণ্ঠ।
” আমার থেকে এই শামুকগুলো নাও “—- রিনিঝিনি কণ্ঠের বালিকার আব্দার।
প্রচন্ড মমতায় কাছে টেনে নিলাম।পাশে বসালাম। নাম তার গুলমেহের।আমার নামের কিয়দংশ থাকার কারনে স্নেহের আতিশয্য আরো একধাপ বেড়ে গেলো। সংসারে মা আর দুই ভাই।প্রচন্ড গরীব।কোনোরকমে তাদের জীবন চলে।এতটুকু বয়স থেকেই তাদের রোজগারে নেমে পড়তে হয়েছে।
এই গুলমেহের হৃদয়ে প্রচন্ড নাড়া দিয়ে গেলো।তার জায়গায়তো আমিও থাকতে পারতাম।আমার জীবনটাওতো গুলমেহেরের জীবনের মতোই হতে পারতো।সামর্থ্য অনুযায়ী তাকে মন যা চাইলো তাই দিলাম।সেই দেয়াটা মোটেও সহজ ছিলোনা! অবাক বিস্ময়ে এই ছোট্ট মেয়েটির নির্লোভ, নিষ্পাপ,সরলতা, সততা উপলব্ধি করছিলাম। কোনো অবস্থাতেই সে নেবেওনা, কিছু খাবেওনা। বহু কষ্টে কিছু দিতে পেরেছিলাম।এই দেয়াটা কিছুই নয়।গুলমেহেরকে তার জীবনের কষ্টকর অধ্যায় থেকে মুক্ত করার সামর্থ্য বা ক্ষমতা কোনটিই আমার নেই। আমি একজন অতি সাধারণ, নগন্য মানুষ।আমি শুধু আমার স্নেহের পরশটা তাকে দিচ্ছিলাম…….!!!!! গুলমেহেরের চাওয়াটাও যেনো এটাই ছিলো।
গুলমেহেরের দৃষ্টিতে আমি তাঙ্গোয়ার মানে ধনী।তার ভাষায় আমার শুধু সুখ আর সুখ; যার জীবনে কোনো দুঃখ নেই।
বললাম, না গুলমেহের তোমার ধারনা ঠিক নয়।
পৃথিবীতে সবাই সুখী আবার সবাই দুঃখী। তুমি যে শামুক বিক্রি করে রোজগার করতে পারো —– এটাই তোমার সুখ। তুমি মিষ্টি হেসে কথা বলতে পারো — এটাই তোমার সুখ।যে অন্ধ, যে বোবা, যে খোঁড়া — তুমিতো তাদের মতো নও। সুতরাং তুমি, আমি, আমরা —-সবাই সুখী।
পৃথিবীটা মায়ার সমুদ্র। এখনও গুলমেহেরের জন্য হৃদয়টা মোচড় দিয়ে ওঠে।দারুচিনি দ্বীপের সেই দ্বীপকন্যা যেনো সমুদ্রের মতোই আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে আবার তার মাথায় স্নেহের পরশ বুলিয়ে দেয়ার জন্য।।
ছবি: লেখক