
রিনি বিশ্বাস

গতবছর পুজোর পরে একটা অনুষ্ঠানে
আমার অনেক সকালে জড়িয়ে আছে ‘আশাবরী’… ছোট্ট, মিষ্টি, আদুরে আশাবরী… যে রিনিকে টিভিতে দেখে ডেকে ওঠে ‘নিনি’ বলে.. পাবলোদাদাকে যেই রিনি স্কুলে পৌঁছতে যায়-তার দিকে সে লজ্জা লজ্জা মুখে তাকায়, ফিক করে হেসে মায়ের আড়ালে লুকোয়… কথা বলেনা.. রিনি কথা বলার চেষ্টা করে.. করতো.. আর করবেনা.. এবার রিনি লুকোবে… আড়াল খুঁজবে… আচ্ছা আশাবরীকে আমি কি বলবো?! কি বলতে পারি?! এই ছোট্ট আশাবরীর বাবা হঠাৎ ‘নেই’ হয়ে গেল কেন, তা কি কোনদিন ওকে বলতে পারবো আমি? এরপর যখনই ওকে দেখবো, তখনই যে আমি কালিকা’দাকে ওর মধ্যে খুঁজবো.. আশাবরীকে বলার মত শব্দও খুঁজবো.. আজীবন … বেশ কয়েকবছর আগে, কবিতার ক্লাসে রত্নাদি এসে গল্প করলেন এক গানের দলের…. গল্প করলেন ওদের মনছোঁয়া মাটির গানের… গল্প করলেন কালিকাপ্রসাদের….সেই প্রথম আমার দোহারের সঙ্গে আলাপ…প্রথম কালিকা’দাকে চেনা…পরে জানলাম কালিকা’দা আমার খুব চেনা-পছন্দের ইউনিভার্সিটির দিদি ঋতচেতার জীবনসঙ্গী.. এরপর বহুবার দোহারকে শোনার সুযোগ হল, কালিকা’দার সঙ্গে চেনা হল… কখন যেন বন্ধুত্বও হয়ে গেল… ২০১৩-এর উত্তর আমেরিকা বঙ্গ সম্মেলন। দোহার যাচ্ছে, আরো অনেকের সঙ্গে আমিও যাচ্ছি.. দোহারের সঙ্গে সেবার অনেক মনভালো মুহূর্ত জড়িয়ে গেল… কালিকা’দা, আমাদের সকলের কখনও বড় দাদা, কখনও বন্ধু-বিদেশের মাটিতে সবসময় সঙ্গী.. অনুষ্ঠানের তুমুল হাততালিতে, মঞ্চে কৌশিকী আর আমাকে হঠাৎ ডেকে নেওয়ায় এমনকি মাঝরাতের খিদে পেটের আড্ডাতেও… যেদিন সবাই ফেরার উড়ান ধরবে, সেদিন টরেন্টোর আকাশ ভেঙে তুমুল বৃষ্টি.. টরেন্টো শহর ভাসলো অকাল-বন্যায়… সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ওখানে থেকে যাওয়া আমি পড়লাম বেশ সমস্যায়.. দুদিন পরে সকালবেলায় পিনাকীর ফোনে অচেনা নম্বরের কল.. ‘পিনাকী, আমি কালিকাপ্রসাদ বলছি, রিনির খবর পেয়েছ? ওখানে ও ভালো আছে তো?’ আমরা সবাই এটুকুই এখন জানতে চাই কালিকা’দা… ‘তুমি, ভালো আছো তো?