
আন্জুমান রোজী,(কানাডা থেকে)
উপনিবেশিক শাসকদের দৌরাত্ম্যেই যুগযুগ ধরে নৃ-জাতিগোষ্ঠীর গোড়া উৎপাটন চলে আসছে। তথাকথিত সুশিক্ষিত, ধ্বজাধারী সাবেক উপনিবেশবাদীদের প্রতিনিধিরা; অর্থাৎ তাদের নব্য উপনিবেশবাদীরা তথাকথিত মুক্ত অর্থনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বার্থে এই নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে । সেইসঙ্গে আছে বিশ্বব্যাপী ক্ষমতায়নের চূড়ান্ত চক্রান্ত । আসুন! এখন দেখি, নৃ-জাতিগোষ্ঠী বা আদিবাসী আসলে কারা?
একটি নির্দিষ্ট এলাকায় অণুপ্রবেশকারী বা দখলদার জনগোষ্ঠীর আগমনের পূর্বে যারা ওই এলাকায় বসবাস করতো এবং এখনও করে; যাদের নিজস্ব আলাদা সংস্কৃতি, রীতিনীতি ও মূল্যবোধ রয়েছে; যারা নিজেদের আলাদা সামষ্টিক সমাজ-সংস্কৃতির অংশ হিসেবে চিহ্নিত করে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যারা সমাজে সংখ্যালঘু হিসেবে পরিগণিত, তারাই আদিবাসী।
পাঁচটি মহাদেশে ৪০টিরও বেশি দেশে বসবাসরত প্রায় ৫,০০০ আদিবাসী সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩০-৩৫ কোটি। নীতি-নির্ধারণী প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়ায় যুগে যুগে এদের অনেকে প্রান্তিকায়িত, শোষিত, বাধ্যতামূলকভাবে একীভূত হয়েছে এবং যখন এসব অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে নিজেদের অধিকারের স্বপক্ষে তারা কথা বলেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা দমন নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে।
আদিবাসীদের অধিকার- বিশেষ করে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের বিষয়টি অনেক রাষ্ট্রের কাছে স্বস্তিদায়ক নয়। কারণ ওইসব দেশের জনগণের একটা বড় অংশই আদিবাসী। যেমন-কানাডা,অস্ট্রেলিয়া,নিউজিল্যান্ড,ভারত, চীন,পাপুয়া নিউগিনি এবং অধিকাংশ ল্যাটিন আমেরিকার দেশসমূহ। আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের বিষয়টি এসব দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে প্ররোচিত করে যা ওইসব দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি হুমকিস্বরূপ।
তথাকথিত সভ্য সাদা, ইউরোপীয় নতুন বসতি স্থাপনকারী অভিবাসীরা (A New Settlers and Immigrants) ওইসব মহাদেশের আদিবাসীদের নির্মম বিদ্বেষ, হিংস্র প্রবঞ্চনা, লোভ আর স্বার্থপর আগ্রাসনের দ্বারা আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডসহ অন্যান্য অঞ্চল থেকে বিলুপ্তির পথে ঠেলে দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকোসহ সেন্ট্রাল ও ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ব্রিটিশ, স্প্যানিশ, ফরাসি, পর্তুগীজ প্রভৃতি উপনিবেশবাদী শক্তি বিগত ৩/৪টি শতক ধরে অত্যন্ত নিষ্ঠুরতার সঙ্গে জাতিগত নির্মূল তৎপরতার মাধ্যমে (Ethnic Cleansing) এসব মুক্ত স্বাধীন আমেরিকান আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোকে পৃথিবী থেকে প্রায় নির্মূল করে দিয়েছে। আজ ওই শ্বেতাঙ্গ মার্কিন, ব্রিটিশ, অস্ট্রেলীয় এবং ইউরোপীয় উপনিবেশবাদীরা তথাকথিত মুক্ত অর্থনীতিকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বার্থে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর নানা পশ্চাৎপদ রাষ্ট্রসমূহের জন্য ‘আদিবাসী সংরক্ষণ’ (Conservation of Aboriginal)-এর ধোঁয়াতুলে তাদের অর্থের মদদপুষ্ট এনজিও এবং মিশনারী চক্রের সুনিপুণ প্রচারণায় ও ষড়যন্ত্রে উপজাতিগুলোর জন্য মায়াকান্না শুরু করেছে। আরম্ভ করেছে ভয়ানক সূক্ষ্ম সম্প্রসারণবাদী ষড়যন্ত্র আর আধিপত্যবাদী চাণক্য চাল। এসব উপজাতি, আদিবাসী কিংবা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর এই মায়াকান্নার পেছনে মূলত ভূ-রাজনৈতিক, সামরিক, ভূ-অর্থনীতিক এবং সর্বোপরি আধিপত্যবাদী স্বার্থই প্রবলভাবে কাজ করছে। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় প্রকৃত আদিবাসীদের তারা যেখানে গণহত্যা, জাতিগত নির্মূলসাধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ধ্বংস করে দিয়েছে। সেখানে তারা এখন ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন সম্ভাবনাময় স্বাধীনচেতা উঠতি শক্তি; বিশেষ করে ইসলামী রাষ্ট্রগুলোতে এসব উপজাতি (Tribal) ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার পক্ষে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন, জাতিসত্তার বিকাশ, আদিবাসী সংরক্ষণ’ ইত্যাদির কথা বলে ভাষাগত, বর্ণগত, ধর্মগত, সাংস্কৃতিক বিভাজন ও দাঙ্গা-হাঙ্গামার প্রেক্ষাপট তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
সাম্রাজ্যবাদীদের ওই হীন চক্রান্তের ফলশ্রুতিতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড এইসব এককালীন ঔপনিবেশিক শক্তিদের নিয়ন্ত্রণাধীন ও আজ্ঞাবহ জাতিসংঘের (ইউএনও) সহযোগিতায় বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র- ইন্দোনেশিয়ার যৌক্তিক সার্বভৌম অঞ্চল তিমুর দ্বীপের পূর্বাঞ্চলকে (ইস্ট-তিমুর) বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ইস্ট-তিমুরের এই বিচ্ছিন্নতার পেছনে আসলে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র কাজ করেছে এবং এখানেও আদিবাসী, উপজাতি ইত্যাদি বিষয়কে সামনে নিয়ে এসেছে সর্বনাশা খ্রিস্টবাদী এনজিও চক্র, মিশনারি গ্রুপ এবং তথাকথিত মানবাধিকার সংরক্ষণ (Human Rights Activists) চক্র। ।
বাংলাদেশেও একই খ্রিস্টবাদী সাবেক ঔপনিবেশিক শক্তিসমূহ তাদের আধিপত্যবাদী ভূ-রাজনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থকে (Geo-Political and Strategical Interests) সংরক্ষণ ও চরিতার্থ করার জন্য তাদের সেই কৌশলকে বাস্তবায়িত করতে চাচ্ছে। এ জন্য তারা বেছে নিয়েছে দেশের এক-দশমাংশ অঞ্চল পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী চাকমা, মার্মা, ত্রিপুরা, মগসহ বিভিন্ন বসতি স্থাপনকারী উপজাতীয় ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীগুলোকে। একই সঙ্গে এই সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী ও তাদের অর্থপুষ্ট এনজিও চক্র বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে যেমন : সিলেটের খাসিয়া, মণিপুরী, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের গারো, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুরের বনাঞ্চলের কুচ রাজবংশীয় বহিরাগত ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীকে এদেশের আদিবাসী বলে প্রচার-প্রপাগাণ্ডা চালাতে শুরু করেছে।
এবার আসি কানাডার কথায়! এবরিজিনালরা হচ্ছে কানাডার আদিবাসী, এদের হাত দিয়েই এই দেশটার গোড়াপত্তন। কালের পরিক্রমায় এরা এখন সংখ্যালঘু। বিশ্বের নানা দেশ থেকে আসা অভিবাসী সম্প্রদায়ের কাছে এরা আদিবাসী হিসেবেই পরিচিত। এই আদিবাসীদের উৎখাতের জন্য যে নির্মম অত্যাচার অভিবাসীরা চালিয়েছিল তা ভাষায় বর্ণনাতীত। এখন আদিবাসীরা প্রায় শূন্যের কোঠায় এসে পৌঁছেছে। সেই সময় উপনিবেশিক শাসকগণ- অর্থাৎ ১৮৮০ সালে ইউরোপ থেকে মিশনারী চার্চ কানাডায় প্রতিষ্ঠা করে আদিবাসী স্কুলগুলোকে তত্ত্বাবধান করতো এবং বাচ্চাদের পাঠদান করতো। সেই সঙ্গে রেসিডেন্সিয়াল স্কুল পদ্ধতির প্রবর্তন করে কানাডার আদিবাসী (ফাস্ট নেশনস) ছেলেমেয়েদের ইউরোপীয় শিক্ষা, সংস্কৃতি শেখাতো এবং খৃষ্ট ধর্মে দীক্ষিত করে তুলতো অর্ধেক বেলা পাঠদান আর অর্ধেক বেলা বাচ্চাদের দিয়ে কাজ করানো হতো। যাতে বাচ্চারা ইংরেজী শিক্ষা, আধুনিক মুল্যবোধ, নীতিশিক্ষা ও খৃষ্ট ধর্ম শিক্ষার পাশাপাশি মূল ইউরোপীয় সংস্কৃতিকে আত্মস্থ করে আসল ইউরোপীয় আদলের হতে পারে। সাথে-সাথে সকল আদিবাসী বাচ্চারা যাতে ধীরে-ধীরে তাদের পুর্বপুরুষের নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি ও জীবনাচারণ ভুলে গিয়ে পুরোপুরি ইংরেজি সংস্কৃতির অংশ হয়ে যায়। উপনিবেশিক শাসকদের উদ্দেশ্য ছিল আদিবাসীদের ভবিষ্যত প্রজন্মদের- তাদের নিজস্ব ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে ভুলিয়ে দিয়ে ইউরোপ থেকে আমদানী করা মূল্যবোধে উজ্জীবিত করা এবং জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা।
কিন্তু তাদের এই কৌশল খৃষ্টধর্ম প্রসারে কাজে লাগলেওা আদিবাসীদের কৃষ্টি ও কালচারকে এ কৌশল দ্বারা একবারে মুছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরিবার থেকে ছোট-ছোট বাচ্চাদের সরিয়ে নিয়ে এসে জোরপূর্বক ধরে রাখা ও শিক্ষাদান করা, পুষ্টিকর খাবার না দেওয়া, শীতের সময় পরিমিত গরম কাপড় না দেওয়া, আর অতিরিক্ত শাসনের কারণে বহু বাচ্চা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হতে থাকে। আবার অনেকে মারাও যায়। যারা বেঁচে থাকে তাদের মধ্যে স্থায়ী মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষকরে ট্রমা বাধ্যতামূলক হয়ে যায়। কেউ-কেউ স্কুল থেকে পালিয়ে যায়,অনেকে স্কুলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আবার কেউ-কেউ আত্মহত্যাও করে। প্রায় শতাব্দীকাল ধরে চলমান এই অমানবিক শিক্ষা পদ্ধতিতে কানাডার আদিবাসীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, যার ফলশ্রুতিতে রেসিডেন্সিয়াল স্কুলগুলো পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে বাধ্য হয়। তবে উপনেবিশক শাসকগোষ্ঠী আদিবাসী জনগণের যে ক্ষতি করেছে তা তারা এখনও ভুলতে পারছেনা।
পৃথিবীব্যাপী আদিবাসীদের নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনার সূত্র ধরে ধাবাহিকভাবে বর্তমান সময়ে দক্ষিণ এশিয়ায় মিয়ানমার দেশের সরকার কর্তৃক রাখাইন এলাকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চরম হত্যাযজ্ঞ চলছে। যা মানবতার ইতিহাসে সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে দিয়েছে। রোহিঙ্গা আদিবাসী জনগোষ্ঠীও পশ্চিম মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি উলেখযোগ্য নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। রোহিঙ্গাদের আলাদা ভাষা থাকলেও তা অলিখিত। মায়ানমারের আকিয়াব, রেথেডাং, বুথিডাং, মংডু, কিয়কতাও, মাম্ব্রা, পাত্তরকিল্লা, কাইউকপাইউ, পুন্যাগুন ও পাউকতাউ এলাকায় এদের নিরঙ্কুশ বাস। এছাড়া মিনবিয়া, মাইবন ও আন এলাকায় মিশ্রভাবে বসবাস করে থাকে। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি মিয়ানমার স্বাধীনতা অর্জন করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু হয়। সে সময়ে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। এ জনগোষ্ঠীর কয়েকজন পদস্থ সরকারি দায়িত্বও পালন করেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে মিয়ানমারের যাত্রাপথ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। রোহিঙ্গাদের জন্য শুরু হয় দুর্ভোগের নতুন অধ্যায়। সামরিক জান্তা তাদের বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে। তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ধর্মীয়ভাবেও অত্যাচার করা হতে থাকে। নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়া হয়। হত্যা-ধর্ষণ হয়ে পড়ে নিয়মিত ঘটনা। সম্পত্তি জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়। বাধ্যতামূলক শ্রমে নিয়োজিত করা হতে থাকে। তাদের শিক্ষা-স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নেই। বিয়ে করার অনুমতি নেই। সন্তান হলে নিবন্ধন নেই। জাতিগত পরিচয় প্রকাশ করতে দেওয়া হয় না। সংখ্যা যাতে না বাড়ে, সে জন্য আরোপিত হয় একের পর এক বিধিনিষেধ। ‘এথনিক ক্লিনজিং’ হলো শুধু একটা বিশেষ জায়গা থেকে মানুষজনকে উচ্ছেদ করে দেওয়া। কিন্তু এটা তারচেয়ে ভয়াবহ- সিনিস্টার এবং ইভিল। কারণ সেখানে একটা পলিসি আছে যে রোহিঙ্গা মানুষদের জন্য এমন একটা পরিবেশ-পরিস্থিতি তৈরি করা হবে যাতে তারা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যায় এবং গোষ্ঠীগতভাবে সমূলে উৎপাটিত হয়। তারা যাতে পুষ্টি না পায় সেজন্য তাদের বাইরের চলাচল সংকুচিত এবং নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়, চাষবাস ও মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় এক মিলিয়ন (১০ লক্ষ) রোহিঙ্গার বসবাস মায়ানমারে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যাদের অর্ধেক পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে গেছে। যারা বিভিন্ন সময় বার্মা সরকারের নির্যাতনের কারণে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। জাতিসংঘের তথ্য মতে, রোহিঙ্গারা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত ও রাষ্ট্রবিহীন জনগোষ্ঠী।
আসলে মানবতা কোথায়?! কাদের হাতে মানবতা বন্দী!? যতই মানবতার কথা বলা হোক না কেন, আমরা সবসময় লক্ষ করে এসেছি, কবির ভাষায় বলতে হয়; “মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য”, এই বিস্ময়কর দ্বৈতসত্তায় পুরো পৃথিবী দোদুল্যমান। একদিকে মানবতার হৃদয় সংবেদন আরেকদিকে রণতূর্য। এ দুয়ের সমান্তরাল অবস্থানে পৃথিবী তার নিজস্ব ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে বটে; তবে মাটিনিঃসৃত যে নৃ-জাতিগোষ্ঠী; তাদের নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে ভিন অভিবাসীরা যতই আধুনিক যুগের সূচনা করুক না কেন, প্রকৃতি কখনওই এদের ক্ষমা করবে না।
ছবি: গুগল